মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের জীবনে এই তিনটে ইচ্ছে পূরণ হয়নি আজীবন! জানলে অবাক হবেন আপনিও









নিজস্ব প্রতিবেদন: বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ যে অভিনেত্রীকে ছাড়া কল্পনা করা যায় না তিনি হলেন মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। আজও দর্শকদের মধ্যে উত্তম সুচিত্রার জুটি সমান ভাবেই জনপ্রিয়। একজন দক্ষ অভিনেত্রী রূপে নিজের স্বতন্ত্র সত্তাকে মেলে ধরেছিলেন সুচিত্রা দেবী। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত জীবন ছিল অত্যন্ত রহস্যময়। লাইট, ক্যামেরা,একশন এর দুনিয়াকে বিদায় জানিয়ে খুব সহজেই তিনি চলে গিয়েছিলেন লোক চক্ষুর অন্তরালে।
সুচিত্রা সেনের এই অজ্ঞাতবাস নিয়ে একেকজনের কিন্তু একেক রকমের মতামত ছিল। এই ঘটনা নিয়ে কিন্তু অনেকে অনেক গল্প বলেছেন, অনেক লেখা লিখিও হয়েছে। তবে তার লোক চক্ষুর অন্তরালে যাওয়ার প্রকৃত কারণ কিন্তু এখনও পর্যন্ত অজানাই রয়ে গিয়েছে।




প্রায় ১২ বছর আগে নিজের জন্মদিনে একান্ত ঘরোয়া আলাপে সুচিত্রা দেবী তার কাছের মানুষ রূপে পরিচিত সাংবাদিক গোপালকৃষ্ণ রায় কে তার জীবনের তিনটি ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু যে স্বেচ্ছায় নির্বাচনের জীবন তিনি বেছে নিয়েছিলেন তাতে কিন্তু এই তিনটি ইচ্ছা পূরণের কোন রকমের সুযোগ ছিল না। কি ছিল সেই ইচ্ছে গুলি? হয়তো আপনাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছে।
যে শেষ তিনটি ইচ্ছে সুচিত্রা দেবী জানান, তার মধ্যে প্রথম যে ইচ্ছেটির কথা বলেছিলেন তিনি সেটা হল কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রহীন উপন্যাসের কিরণময়ী চরিত্রটিতে অভিনয় করা। দ্বিতীয় ইচ্ছাটি হল মা সারদাময়ীর ভূমিকায় অভিনয় করা। আর সবশেষে তৃতীয় ইচ্ছাটি ছিল একদিনের জন্য হলেও যাত্রাতে অভিনয় করা। সুচিত্রা দেবীর এক দূর সম্পর্কের বোন যাত্রায় অভিনয় করতেন। তাকে দেখেই যাত্রায় অভিনয় করার ইচ্ছে জাগ্রত হয়েছিল মহানায়িকার মনে। কিন্তু জীবনের এই শেষ তিনটি ইচ্ছের একটিও কিন্তু তার পূরণ হয়ে ওঠেনি।




নিজের জীবনের এই অতৃপ্ততা নিয়েই চলে গিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। অভিনেত্রী মাধুরী মুখোপাধ্যায় সুচিত্রা দেবী কে নিয়ে একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “কার একটা লেখায় পড়েছিলাম উনি চেয়েছিলেন ওনার যে রূপটি মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে, চিরদিনের মত তাই থেকে যাক। তাই নাকি উনি আর বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগ রাখেন না। কিন্তু আমি অন্তত একথা বিশ্বাস করি না”।
প্রসঙ্গত এই কথার মাধ্যমে সুচিত্রা সেনের জীবনের কোন গোপন কষ্টের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অভিনেত্রী মাধুরী মুখোপাধ্যায়। যাই হোক না কেন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা, খ্যাতি ও অর্থের মোহ ত্যাগ করে স্বেচ্ছা নির্বাসিত জীবনযাপনের যে সিদ্ধান্ত সুচিত্রা দেবী নিয়েছিলেন সেই সিদ্ধান্তই কিন্তু সকল ভক্ত এবং মানুষের কাছে তাকে চিরকালের জন্য আবেদনময়ী করে রেখেছে।




উত্তম কুমারের সাথে বরাবর থেকেই কিন্তু মহানায়িকার রসায়ন ছিল দেখার মতো। তবে পর্দার সম্পর্কের বাইরে তাদের মধ্যে আলাদা কোন সম্পর্ক ছিল কিনা সেই সম্পর্কে কিন্তু কিছুই জানা যায়নি।। অনেকেই মনে করতেন তাদের মধ্যে ছিল প্রেম, আবার অনেকেই মনে করতেন সেটা ছিল বন্ধুত্ব, আবার কারোর কথায় এটা ছিল একে অপরের প্রতি মানবিক ভালোবাসা।
তবে উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর খুব বেশি দিন কিন্তু পর্দার জগতে থাকেননি সুচিত্রা সেন। কয়েক বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণ আড়ালে চলে গিয়েছিলেন তিনি। শেষবার তাকে মহানায়কের মৃত্যুর সময়ই স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল তার শয্যার পাশে। প্রসঙ্গত একটা সময় কিন্তু উত্তম কুমার ও বলে গিয়েছিলেন যে মহানায়িকা সুচিত্রা সেন না থাকলে উত্তম কুমার কখনো উত্তম কুমার হতে পারত না।। কি কথার ভিত্তিতে তিনি এই প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন যদিও তা জানা নেই। তবে যাই হয়ে যাক না কেন আজও মানুষের মনে কিন্তু উত্তম সুচিত্রা জুটিয়ে একইভাবে অমলিন অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছে।
ভিডিওটি দেখতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন- https://youtu.be/hW7cJzKew5o











